যশোর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে ঠিকাদার সংকট দেখা দিয়েছে। এতে টেন্ডার কার্যক্রমে চরম বিঘ্ন ঘটছে। বিশেষত একাধিক ঠিকাদারদের অংশগ্রহণের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি যশোরে চার কোটি টাকার একটি টেন্ডারে স্থানীয় কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারেননি। ফলে বাইরের জেলার দুটি প্রতিষ্ঠান ভাড়াটিয়া হিসেবে টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করে।
সওজের বর্তমান টেন্ডার বিধি অনুযায়ী, অংশগ্রহণের জন্য বিগত পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক। বিএনপি ঘরানার ঠিকাদাররা গত ১৬ বছর কাজের বাইরে থাকায় এ শর্ত পূরণে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন। অপরদিকে, আওয়ামী লীগ ঘরানার শীর্ষ ঠিকাদারদের অনেকেই কালো তালিকাভুক্ত বা মামলার কারণে আত্মগোপনে রয়েছেন। এর ফলে উভয় পক্ষের শীর্ষ ঠিকাদাররাই অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তথ্যমতে, যশোরসহ দেশের ২৩১টি প্রধান সড়কের ১২৪০ কিলোমিটার রাস্তা এবং প্রায় সাড়ে তিনশ ব্রিজ বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। এ সড়কগুলো মেরামতের জন্য প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও বেশিরভাগ টেন্ডার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। যশোর অঞ্চলে সাম্প্রতিক টেন্ডার কার্যক্রমে স্থানীয় ঠিকাদারদের অনুপস্থিতির ফলে বাইরের জেলার দুটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। তবে অভিযোগ উঠেছে, বাইরের লাইসেন্স ব্যবহার করে স্থানীয় ঠিকাদার কাজ বাগিয়ে নিচ্ছেন।
ঠিকাদাররা বর্তমান সংকট নিরসনে টেন্ডার শর্ত শিথিলের দাবি জানিয়েছেন। এলটিএম (লোয়ার টেন্ডার ম্যার্জিন) বাড়ানো এবং পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার শর্ত শিথিল করার প্রস্তাব করেছেন তারা। অনেকের মতে, চলমান বিধির পরিবর্তন না করলে সংকট দীর্ঘস্থায়ী হবে।
যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানিয়েছেন, সংকট উত্তরণে উপর মহলে দফায় দফায় আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন জটিলতার কারণে ঠিকাদারদের অংশগ্রহণ কমছে। তবে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। শিগগিরই এর একটি সমাধান আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
খুলনা গেজেট/এএজে